সকল জ্যামিতিক সংজ্ঞা

যে শাস্ত্র পাঠ করিলে ভূমি ও স্থান পরিমাপের যাবতীয় বিষয় সম্মন্ধে জ্ঞান লাভ করা যায় তাকে জ্যামিতি বলে৤ জ্যামিতি (Geometry) গণিতের একটি শাখা যেখানে আকার ও আকৃতি এবং বিভিন্ন আঙ্গিকের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করা হয়৤ জ্যামিতিক স্থান বা জগতের বিজ্ঞান হিসেবে গণ্য করা যায়৤ নিচে বিভিন্নি সংজ্ঞা নিয়ে আলোচনা করা হল৤


জ্যামিতিক সংজ্ঞা
জ্যামিতিক সংজ্ঞা

সমকোণঃ একটি সরল রেখার উপর অন্য একটি লম্ব টানলে এবং লম্বের দু’পাশে অবস্থিত ভূমি সংলগ্ন কোন দুটি সমান হলে, প্রতিটি কোণকে সমকোণ বলে৤ একসমকোণ = ৯০ ডিগ্রি৤

সূক্ষ্ণকোণঃ এক সমকোণ (৯০) ডিগ্রি অপেক্ষা ছোট কোণকে সূক্ষ্ণকোণ বলে৤

সথূলকোণঃ এক সমকোণ অপেক্ষা বড় কিন্তু দুই সমকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে সথূলকোণ বলে৤

প্রবৃদ্ধকোণঃ দুই সমকোণ অপেক্ষা বড় কিন্তু চার সমকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবৃদ্ধ কোণ বলে৤ ৩৬০>১৮০ হলে এটি একটি প্রবৃদ্ধকোণ৤

সরলকোণঃ দু’টি সরল রেখা পরস্পর সম্পর্ণ বিপরীত দিকে গমন করলে রেখাটির দু’পাশে যে কোণ উৎপন্ন হয় তাকে সরলকোণ বলে৤ সরল কোণ দুই সমকোণ বা ১৮০ ডিগ্রি৤

বিপ্রতীপকোণঃ দু’টি সরল রেখা পরস্পর ছেদ করলে যে চারটি কোণ উৎপন্ন হয় এদের যে কোণ একটি ওপরটির বিপরীত তাকে বিপ্রতীপ কোণ বলে৤

সম্পূরককোণঃ দু’টি কোণের সমষ্টি ১৮০ ডিগ্রি বা দুইসমকোণ হলে একটিকে অপরটির সম্পূরক কোণ বলে৤

পূরককোণঃ দু’টি কোণের সমষ্টি এক সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রি হলে েএকটিকে অপরটির পূরক কোণ বলে৤

একাস্তরকোণঃ দু’টি সমান্তরাল রেখাকে অপর একটি রেখা তির্যকভাবে ছেদ করলে ছেদক রেখার বিপরীত পাশে সমান্তরাল রেখা যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে একান্তর কোণ বলে৤ একান্তর কোণগুলো পরস্পর সমান হয়৤

সন্নিহিতকোণঃ যদি দু’টি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকে তবে একটি কোণের অপর কোণের সন্নিহিত কোণ বলে৤

ত্রিভূজঃ তিনটি সরলরেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ  ক্ষেত্রকে ত্রিভূজ বলে৤

সূক্ষ্ণকোণী ত্রিভূজঃ যে ত্রিভূজের তিনটি কোণই এক সমকোণের চেয়ে তাকে সূক্ষ্ণকোণী ত্রিভূজ বলে৤

সথূলকোণী ত্রিভূজঃ যে ত্রিভূজের একটি কোণ সথূলকোণ বা একসমকোণ অপেক্ষা বড় তাকে সথূলকোণী ত্রিভূজ বলে৤ কোন ত্রিভূজের একের অধিক সথূলকোণ থাকতে পারে না৤

সমকোণী ত্রিভূজঃ যে ত্রিভূজের একটি কোণ সমকোণ তাকে সমকোণী ত্রিভূজ বলে৤ কোন ত্রিভূজের একটির অধিক সমকোণ থাকতে পারে না৤ সমকোণী ত্রিভূজের সমকোণের বিপরীত বাহুকে অতিভূজ এবং সমকোণ সংলগ্ন বাহুদ্বয়ের একটিকে ভূমি এবং অপরটিকে লম্ব বলে৤

লম্বকেন্দ্রঃ ত্রিভূজের তিনটি শীর্ষ থেকে বিপরীত বাহুগুলির উপর তিনটি লম্ব সমবিন্দুগামী এবং বিন্দুটির নাম লম্বকেন্দ্র৤

পরিবৃত্তঃ তিনটি শীর্ষবিন্দু যোগ করে যেমন একটি মাত্র ত্রিভূজ হয় তেমনি তিনটি শীর্ষবিন্দুগামী বৃত্ত ও একটিই আর এর নাম পরিবৃত্ত৤

পরিকেন্দ্রঃ পরিবৃত্তের কেন্দ্র যে বিন্দু ত্রিভূজের শীর্ষত্রয় থেকে সমদূরত্বে স্থিত তাকে পরিকেন্দ্র বলে৤

চতুর্ভুজঃ চারটি রেখাংশ দিয়ে সীমাবদ্ধ সরলরৈখিক ক্ষেত্রের সীমারেখাকে চতুর্ভুজ বলে৤ 

কর্ণঃ চতুর্ভুজের বিপরীত শীর্ষ বিন্দুগুলোর ‍দিয়ে তৈরি রেখাংশকে কর্ণ বলে৤ 

সামন্তরিকঃ যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো সমান ও সমান্তরাল এবং বিপরীত কোণগুলো সমান কিন্তু কোণগুলো সমকোণ নয় তাকে সামন্তরিক বলে৤

আয়তঃ যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো সমান ও সমান্তরাল এবং প্রতিটি কোণ সমকোণ, তাকে আয়ত বলে৤

বর্গক্ষেত্রঃ বর্গক্ষেত্র বলতে ৪টি সমান বাহু বা ভূজ  বিশিষ্ট বহুভূজ, যার প্রত্যেকটি অন্তঃস্থ কোণ এক সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রির সমান৤

রম্বসঃ রম্বস এক ধরনের সামান্তরিক যার সবগুলি বাহু সমান কিন্তু কোণ গুলো সমকোণ নয়৤

ট্রাপিজিয়ামঃ যে চতুর্ভুজের এর দুইটি বাহু সমান্তরাল কিন্তু অসমান তাকে ট্রাপিজিয়াম বলে৤

সমান্তরাল রেখাঃ একই সমতলে অবস্থিত দুটি সরল রেখা একে অপরকে ছেদ না করলে, তাদেরকে সমান্তরাল সরল রেখা বলে৤

ছেদকঃ যে সরলরেখা দুই বা ততোধিক সরলরেখাকে ছেদ করে, তাকে ছেদক  বলে৤

ভরকেন্দ্রঃ ত্রিভূজের কোণ একটি শীর্ষবিন্দু এবং তার বিপরীত বাহুর মধ্যবিন্দুর সংযোজক সরলরেখাকে মধ্যমা বলে৤ ত্রিভূজের মধ্যমাত্রয় সমবিন্দু৤ এই বিন্দু ত্রিভূজের ভরকেন্দ্র৤

বর্গঃ আয়তক্ষেত্রের দুটি সন্নিহিত বাহু সমান হলে তাকে বর্গ বলে৤

স্পর্শকঃ একটি বৃত্ত একটি সরলরেখার যদি একটিও কেবল ছেদবিন্দু থাকে তবে রেখাটিকে বৃত্তটির একটি স্পর্শক বলা হয়৤

ঘনকঃ আয়তাকার ঘনবস্তুর দৈর্ঘ, প্রস্থ ও উচ্চতা সমান হলে তাকে ঘনক বলে৤

কোণকঃ কোন সমকোণী ত্রিভূজের সমকোণ সংলগ্ন যে কোণ একটি বাহুকে স্থির রেখে ঐ বাহুর চতুর্দিকে ত্রিভূজটিকে ঘুরালে যে ঘনবস্তু উৎপন্ন হয় তাকে সমবৃত্তভূমিক কোণক বলে৤

সিলিন্ডার বা বেলুনঃ একটি আয়তক্ষেত্রের যে কোন একটি বাহুকে স্থির রেখে ঐ বাহুর চতুর্দিকে আয়তক্ষেত্রটিকে ঘুরালে যে ঘনবস্তু উৎপন্ন হয় তাকে সিলিন্ডার বা বেলুন বলে৤

বহুভুজঃ যদি বহুভুজের সবগুলি বাহু ও কোণ সমান হয়, তবে সেটিকে বহুভুজ বলে৤



ধন্যবাদ



2 comments:

Powered by Blogger.